সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে একটি দম্পতির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জান্নাত তোহা ও তার সঙ্গী নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো এমনভাবে অনলাইনে উপস্থাপন করেছেন, যা দেশের সামাজিক রীতিনীতি ও নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অনেকেই মনে করছেন।তাদের দাবি, তারা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দম্পতি যারা সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সন্তান জন্মের মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যদিও বিষয়টি অনেকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে একটি বড় অংশ একে অপ্রয়োজনীয়, অশালীন এবং ব্যক্তিগত গণ্ডির লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করছেন।এই ধরণের কনটেন্ট সমাজে কী বার্তা দিচ্ছে? তরুণ সমাজের উপর এর প্রভাব কী হবে? এগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের প্রশ্ন তুলতে হয় বর্তমান ভাইরাল সংস্কৃতি নিয়ে। জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষ্যে কতদূর যেতে পারি আমরা? ব্যক্তিগত জীবনের গোপন মুহূর্তগুলো পাবলিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরা কতটা যৌক্তিক বা গ্রহণযোগ্য?বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার প্রতিযোগিতা মানুষকে আস্তে আস্তে ‘সেন্সেশনাল কন্টেন্ট’-এর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যেখানে নৈতিকতা বা সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রাধান্য পাচ্ছে না। এই প্রবণতা তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিকৃত মানসিকতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মনোবিজ্ঞানীরা।এই ঘটনার মাধ্যমে আমরা যেন সমাজের গভীর এক সমস্যার দিকে তাকাতে পারি — জনপ্রিয়তা ও ভাইরাল হওয়ার লোভে অনেকে নিজের ব্যক্তিগত মূল্যবোধ, সমাজের রীতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিকতার কথা ভুলে যাচ্ছেন। তাই এখনই সময়, কনটেন্ট নির্মাণ ও উপভোগে আমাদের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ জোরদার করার।
ভাইরাল সংস্কৃতি ও তরুণ প্রজন্ম: জনসচেতনতা না কী কন্টেন্টের নামে কাণ্ডজ্ঞানহীনতা?
